শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে উঠেছিল রেল দুর্ঘটনার খবর। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। প্রথমে মনে করা হয়েছিল মালগাড়ি এবং এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ। পরে ক্রমে জটিল হতে শুরু করে করে পরিস্থিতি। সামাজিক মাধ্যমে প্রচুর ভিডিও, স্টিল ছবি প্রমাণ দিচ্ছে শুক্রবারের রেল দুর্ঘটনা ছোটখাটো কোনো ঘটনা নয়। দেশের অন্যতম ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। মৃত্যুর সংখ্যা ইতিমধ্যে ২০০ ছাড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংখ্যাটা আরও বাড়লে অনেকেই হয়তো অনেক হবেন না।
গোটা রাত ধরে কাজ চলেছে। সকালেও লাইনের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বগি। এখন মনে করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার নেপথ্যে দুটির বেশি ট্রেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেস, মালগাড়ি ছাড়াও আরও একটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ঠিক কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটল সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। মন্ত্রী, কর্তারা ছুটে গিয়েছেন ওড়িশার বালাসোরের ঘটনাস্থলে। গতকাল রাতেই ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
রেলের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ শালিমার-চেন্নাই করমন্ডল এক্সপ্রেসের ১০-১২টি বগি বালাসোরের কাছে লাইনচ্যুত হয়ে অন্য রেললাইনে পড়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর যশবন্তপুর থেকে হাওড়াগামী আরেকটি ট্রেন লাইনচ্যুত বগির সঙ্গে ধাক্কা খায়, যার ফলে ৩-৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দুটি ট্রেনের কমপক্ষে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং কমপক্ষে চারটি বগি রেললাইন থেকে অনেক দূরে ছিটকে গিয়েছে। ওড়িশার মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, ২৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৯০০ জন। আহতদের সোরো সিএইচসি, গোপালপুর সিএইচসি এবং খান্তাপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সুপারফাস্ট ট্রেনের উল্টে যাওয়া কোচের ভেতরে আরও অনেকে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পরে একটি হেল্পলাইন নম্বর (67822 62286) জারি করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে এবং আহতদের বালেশ্বর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
ট্রেনটি ওড়িশার বালাসোর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনাটি এতটাই মারাত্মক ছিল যে অনেক কোচ ভেঙে পড়েছিল। ট্রেনটি পশ্চিমবঙ্গের শালিমার স্টেশন থেকে ছেড়ে চেন্নাইয়ের পুরচি থালাইভার ডঃ এমজি রামচন্দ্রন সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনে যাওয়ার কথা ছিল। সরকার বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে – 033-26382217, 8972073925, 67822 62286, 9332392339।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার পর জানিয়েছিলেন, “উদ্ধার, পুনরুদ্ধার ও সহায়তার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা শুরু করা হয়েছে। আমরা ওড়িশা সরকার এবং রেল কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে এবং উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার জন্য ৫-৬ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে মুখ্য সচিব এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে ক্রমাগত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। “